শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রেফতার অপরাধীদের বিএনপি কর্মী দাবি করছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট

গ্রেফতার অপরাধীদের বিএনপি কর্মী দাবি করছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধে গ্রেফতার হয়। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ও রিজভী সাহেবরা গ্রেফতারের যে হিসাব দিচ্ছেন, তাতে মনে হচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য যারা গ্রেফতার হচ্ছে, পুলিশের খাতায় যারা অপরাধী, তাদের কর্মী দাবি করছে।

 

শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে চিটাগাং উইম্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ১৪তম আন্তর্জাতিক উইম্যান এসএমই এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির কোনো নেতা কিংবা কর্মীর বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয় না। তাদের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়েছে, সেগুলো গাড়ি পোড়ানোর মামলা, পুলিশ ও মানুষের ওপর হামলার মামলা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা। এসব মামলায় তারা গ্রেফতার হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন।

 

বিএনপি নিজের দলটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য গতানুগতিক কিছু কর্মসূচি পালন করে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাড়ি যখন বসে যায় তখন সেটির ব্যাটারি মাঝে মধ্যে স্টার্টে রাখতে হয়। বিএনপিও পুরোনো গাড়ির মতো বসে গেছে। বসে যাওয়াতে তারা গাড়ি স্টার্টে রাখার জন্য মাঝে মধ্যে দলটাকে স্টার্ট দেয় এবং সেজন্য কিছু গতানুগতিক কর্মসূচি পালন করে।

ড. হাছান বলেন, আমরা চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছি, এটা গত ১৫ বছর ধরে শুনতে পাচ্ছি। চোরাবালিটা এতো শক্ত যে, তাদের আরও বহু বছর অপেক্ষা করতে হবে।

 

মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর যারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তারা আগামী, পরশু চলে যাবে, সেটি কনফার্ম কি না সাংবাদিকদের প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, আমাদের সঙ্গে যেটি আলোচনা হয়েছে, তাদের ২২ এপ্রিল নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে সেটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করবে। সেখানকার পরিস্থিতি, তাদের পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া কতটুকু নিরাপদ, একই সঙ্গে সমুদ্র এবং আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।

 

এর আগে ১৪তম আন্তর্জাতিক উইম্যান এসএমই এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশে নারীর যে ক্ষমতায়ন হয়েছে গত ১৫ বছরে সেটি পৃথিবীর সামনে একটি উদাহরণ। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান সমগ্র পৃথিবীতে পঞ্চম। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমাদের অবস্থান দ্বিতীয় অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার পরে আমাদের অবস্থান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার নারী, রেকর্ড সংখ্যক নারী মন্ত্রিসভার সদস্য। এছাড়া আমাদের স্থানীয় সরকার পর্ষদে ত্রিশ ভাগ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। আজ থেকে ১০ বছর আগেও কেউ ভাবেনি জেলার ডিসি, এসপি, উপজেলার বিপুল সংখ্যক ইউএনও নারী হবে। নারী মেজর জেনারেল হয়েছে, নারী হাইকোর্টের জাস্টিস, এফিলিয়েট ডিভিশনের জজও হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্ন দেখান না, স্বপ্নের বাস্তবায়নও করেন। আজকে বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করে দেশকে যখন উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। আমাদের যে ধাবমান চাকা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এগিয়ে চলছিল, সেই চাকাকে ঘুর্ণায়মান চাকায় রূপান্তর করা হয়। ২১ বছর দেশ এক জায়গায় ঘুরপাক খেয়েছে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা সরকার গঠন করার পর দেশ আবার এগিয়ে যাওয়া শুরু করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার ১৯৯৯ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। এটি যখন বঙ্গবন্ধু কন্যা ঘোষণা করেন, তখন বিএনপির সাইফুর রহমানসহ অনেকে বলেছিলেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘোষণা করা ভালো না। তাহলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে না। যারা আজকে লম্বা লম্বা কথা বলেন, তারা নারীদের উন্নয়নের জন্য কি করেছিল এমন প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল তারা নারী উন্নয়নের জন্য কিছু করেনি, তারা নারীদের পিছিয়ে রেখেছিল। আজকে নারীদের উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। সবাই মিলে দেশটাকে গড়তে হয়। দেশ গড়ার দায়িত্ব প্রত্যেকটি নাগরিকের। শুধু সরকার করে দেবে এই মানসিকতা থাকলে দেশ কখনো এগিয়ে যায় না।

 

ভারতের গরু চোরাকারবারিরাও দেশপ্রেমিক উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ভারত থেকে যে এতো গরু আসে কোনো সময় একটা ষাঁড় কিংবা গাভি তারা পাঠায় না, সবগুলো বলদ গরু পাঠায়, যেগুলো প্রজনন করতে পারে না। কারণ সেগুলো পাঠালে এখানে প্রজন্ম তৈরি হবে ওখান থেকে আর গরু আসবে না। আর আমরা সেটা মাথায় রাখি না। সুতরাং সবাই মিল দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে এবং সেই দেশ গড়ার ক্ষেত্রে উইম্যান চেম্বার ভূমিকা রাখতে পারে।

 

চিটাগাং উইম্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে গত ১৫ বছর যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তার সাক্ষি আজকের চট্টগ্রাম। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ বছর আমরা বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছি হস্তশিল্পকে। এসএমই এবং নারী উদ্যোক্তাদের এই বর্ষপণ্যকে গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে সারাদেশে এবং ই-কমার্সের মাধ্যম সারাবিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা ‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ এই স্লোগানে সারা বাংলাদেশ থেকে গ্রাম পর্যায়ে যে হস্তশিল্পগুলো আছে, সেগুলোকে বাছাই করে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে এবং বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিদেশে পৌঁছে দিতে চাই।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দিলোয়ারা ইউসুফ এমপি, শামীমা হারুন লুবনা এমপি, এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম, জাতীয় মহিলা সংস্থার সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চিটাগাং ওমেন চেম্বার অ্যান্ড কমার্স সহ-সভাপতি ও এক্সপো চেয়ারম্যান আবিদা মোস্তফা।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৭:১৭ | রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com